My Poem

.          একটা দেশের মাঝেই ছিলো অন্য আরেক দেশ,
            তাদের মাঝে বিভেদ ছিলো বেশ।
            কারও হাতে শাসন ছিলো,
            দেশ শোষণের আসন ছিলো,
            সাথে ছিলো মনের মাঝে ভরপুর বিদ্বেষ।
            তারা ভাবতো তারাই সব,
            তারা সব মহানুভব।
            দেশে তাদের শাসন-শোষণ চলবে অনিমেষ।

সেই      দেশের মাঝে অন্য জাতি, ক্লান্ত ছিলো তারা,
            অত্যাচারে ছিলো দিশেহারা।
তাদের  দেয়ালে পিঠ ঠেকলে পরে
            উঠলো ফুঁসে হঠাৎ করে,
            এক হলো সব ভাঙতে সকল অনিয়মের ধারা।
            সব ভেদাভেদ ছুঁড়ে ফেলে
            কাঁধে কাঁধে সবাই মিলে
            ঠিক করলো ভিনদেশীদের করবে যে দেশছাড়া।

তখন    দানবেরা ন্যায়বিচারের কথা গেলো ভুলে,
            তাদের মেকি মুখোশ গেলো খুলে।
            রক্তহোলির মত্ত নাচে
            অগ্নিশিখার তপ্ত আঁচে
            নরক প্রলয় আনলো ধরায় বজ্রধ্বনি তুলে।
            ভুলে সাম্যবাদের গান
            তখন সেসব পাষাণ প্রাণ
            করলো আঘাত মানবতার মূল্যবোধের মূলে।

সাথে     চামচিকা আর ছারপোকারা নাড়লো সুখে দাড়ি,
            বললো 'সুযোগ হেলায় কেন ছাড়ি?'
            তারা পা-চাটা সব প্রাণী,
            তারা কেমন সবাই জানি,
তারা     সুযোগলোভী মানুষরূপী জন্তু এ দেশটারই।
            দেশের বুদ্ধিজীবী মেরে
            ঘরের মা-বোনদের ধরে
            মনের সুখে লুটপাটে সব মাতলো তাড়াতাড়ি।

তাদের  দমন-পীড়ন অত্যাচারে কেউ থামেনি তাতে,
            বরং সবাই অস্ত্র নিলো হাতে।
            আপন প্রাণের মায়া ছেড়ে
            দেশের সবাই এলো তেড়ে,
            নির্মমতার জবাব দিলো তুমুল প্রতিঘাতে।
            দিকে দিকে উঠলো সাড়া,
            বুঝে গেলো দানবেরা
            চলবে না আর শাসন তাদের স্বাধীন এ দেশটাতে।

            তখন দেখি পায়ের ফাঁকে লেজ ঢুকালো তারা,
            জান বাঁচাতে তারাই দিশেহারা।
            লাজলজ্জার মাথা খেয়ে
            হুমড়ি খেয়ে পড়লো পায়ে,
            বললো, 'এসব ঢের হয়েছে, এই বেলা চাই ছাড়া'।
            সেসব চামচিকারাও তাতে
            ভয়ে কেউ পালালো সাথে,
আর     গর্তে গিয়ে মুখ লুকালো দেশে ছিলো যারা।

            আমরা তখন সবাই খুশি, স্বাধীন এ দেশ বুঝি,
            স্বপ্ন দিয়ে নতুন জীবন খুঁজি।
            এ দেশ এবার নতুন করে
            সবাই মিলে তুলবো গড়ে,
            মনের মাঝে উদ্দীপনা আশাই ছিলো পুঁজি।
            তখন শুধুই সুখের ঢেউ,
            তখন তাই বুঝিনি কেউ
            এই জগতে মিলে না যে কিছুই সোজাসুজি।

তাই      আজও দেখি স্বাধীনতার অর্ধ শতক পরে
            দেশপ্রেমীরা ধুকে ধুকে মরে।
            ক্ষমতাতে যে যায় দেখি
            হরেদরে সবাই একই,
            সবাই বুঝে দেশটা লুটে খাবে কেমন করে।
            গর্ত ছেড়ে তাইতো আবার
            এ দেশটাকে করতে সাবাড়
            ছারপোকারাও বেড়ায় ঘুরে তাদের আঁচল ধরে।

হায়      হতভাগা এ দেশ আমার, হতভাগা জাতি!
            প্রতারণাই নিত্য যেন সাথী।
            বারে বারে গর্জে উঠে
            যতোবারই যাই না ছুটে
            স্বপ্ন অধরাই থেকে যায় ধ্বংসে যতোই মাতি।
            আমরা তবু হাল ছাড়ি না,
            আমরা কারো ধার ধারি না,
            আঁধার পারি দিতে জানি আসুক যতো রাতই।
আমরা  বীর বাঙালী জাতি।


(রচনাকাল: ১২ মার্চ ২০১০ ইং)